ঋষি চ্যাটার্জী , ফাঁসীদেওয়া :- প্রতিটি দিন কাটছে আতঙ্কে , সময় হল প্রায় মাস চারেক , শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের অন্তর্গত ফাঁসীদেওয়া ব্লকের ভেলকু জোত , নয়ন জোত , টামবাড়ি , মুন্সিবাড়ি এলাকায় ঘোরাফেরা করছে চিতাবাঘ । গ্রামবাসীরা প্রথম চিতাবাঘ দেখেছিলেন এলাকার একটি কবর স্থানে , সেই থেকেই এলাকায় ছড়ায় চিতার আতঙ্ক । বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক মাসে । কখনো দেখা যাচ্ছে খামারে মুরগির সংখ্যা কম , আবার কখনো গবাদি পশুর গায়ে রয়েছে থাবার দাগ । কিন্তু কখনোই ঠিক হাতেনাতে ধরা যাচ্ছেনা , সচরাচর দেখাও মিলছেনা বাঘ বাবাজির । স্থানীয় প্রশাসনকে ব্যাপারটা জানালে , বন দফতর থেকে এসে মোট দুটি খাঁচা পেতে যান চিতাবাঘ ধরবার জন্য । কিন্তু সে যে খাঁচার দিকে পা ও বাড়ায়না । এদিকে গ্রাম গুলিতে একের পর এক অঘটন ঘটেই চলেছে । সন্ধ্যে নামলেই গৃহস্থের ঘর থেকে কখনো নিয়ে যাচ্ছে ছাগল তো কখনো বাছুর । সোরগোল পড়ল গত দিন তিন আগে , গোয়াল ঘর থেকে গবাদি পশু নিয়ে যেতেই চিতাবাঘ টিকে দেখা যায় চা বাগানের মধ্যে , লোকজনের ভিড়ে সে যাচ্ছে এদিক থেকে সেদিকে । এদিকে গ্রামবাসীরা লাঠিসোটা নিয়ে প্রায় একপ্রকার ঘিরে রেখেছে তাকে । গোটা রাত চলল টহলদারি , খবর পেয়ে সকালে আসল বন দফতর । হাসখোয়া টি গার্ডেন সংলগ্ন এলাকায় মাইকিং করে রেড এলার্ট জারি করে দেওয়া হয় । নতুন করে পাতা হল খাঁচা , বিছানো হল জাল । টানটান উত্তেজনা , গোটা দিন পেরিয়ে অবশেষে রাতে খাঁচা বন্দি হল চিতা বাঘ , নিয়ে যাওয়া হল সুকনা বন বিভাগে ।
কিন্তু ঘটনার এখানেই শেষ নয় , এলাকাবাসীদের দাবি এই চত্বরে চিতাবাঘ একটি নয় , রয়েছে চারটি । রাতে বাড়ি ফেরার পথে দুটো একসাথে দেখা গিয়েছে , আবার নৈশ ভোজনে দেখা মিলেছে চারটি । গত তিন মাস ধরে বন দফতরের খাঁচায় গ্রামবাসীদের প্রচেষ্টায় এখনো পর্যন্ত ধরা পড়েছে একটি চিতাবাঘ , বাকি তিনটি রইল অধরা , কিন্তু এই মুহূর্তে খাঁচার সংখ্যা একটি । এলাকাবাসীদের এক প্রকার ক্ষোভ জন্মেছে, তাদের কথায় বন দফতর তেমন কোন আমল দেননা । অপরদিকে বাগডোগরা রেঞ্জ অফিসার সুনীল রায় জানান এলাকায় আরেকটি চা বাগান রয়েছে , কোন মামলা মোকদ্দমার জন্য তা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ । ফলে পরিচর্যার অভাবে তা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে , আর এইরূপ পরিবেশ চিতা বাঘের জন্য মনোরম । সেক্ষেত্রে আরো চিতা থাকতেই পারে । কিন্তু গ্রামবাসীদের কি হবে ? দিনের পর দিন দুশ্চিন্তার কালো মেঘ ছেয়ে ফেলছে তাদের । ঘর থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছেন এলাকাবাসীরা , স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে পড়ুয়াদের , সন্ধ্যের পর দরজায় পড়ছে খিল ।