দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- শহরে কল সেন্টারের আড়ালে চলছে অবৈধ ব্যাবসা । ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা। প্রতারণার জাল বিস্তার হয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই হঠাৎ করেই শহরে বিভিন্ন কল সেন্টারে তল্লাশি চালায় তেলেঙ্গানা সাইবেড়াবাদ মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানা। প্রায় মাস খানেক ধরে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিভিন্ন এলাকা রেকি করে নানাবিধ তথ্য নিজেদের নখ দর্পনে আনাবার পর শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে ইন্টিমেশন দিয়ে শুরু হয় ধড়-পাকড়। একদিনের তল্লাশি অভিযানে সাত জনকে আটক করে সাইবেড়াবাদ থানার পুলিশ। যাদের মধ্যে চার জনকে নোটিস পিরিয়ডে তেলাঙ্গানায় গিয়ে হাজিরা দিতে হবে এবং বাকি তিন জনকে ট্রানজিট রিমান্ডে তেলেঙ্গানা নিয়ে যাওয়া হয়।
তবে সাইবেড়াবাদ মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম থানার ইন্সপেক্টর এম.রভিন্দ্রর রেড্ডি জানান , একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে শহরের বিভিন্ন কল সেন্টারের বিরুদ্ধে। এক একটি কেসে উঠে আসছে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণার অভিযোগ । ব্যাঙ্গালোর আইটির সহযোগিতায় এদের একেবারে নির্দিষ্ট স্থানে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে এরাই যে শেষ কথা তা নয়। যাদের গ্রেফতার করে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে যেমন অভিযোগ রয়েছে তেমনি কান টানতেই বহু মাথার হদিস মিলিছে। এম.রভিন্দ্রর রেড্ডি আরও জানান , কিংপিন সন্টু দাস , মাম্পি দাস , দেবাশীষ মুখার্জি যেমন রয়েছে তেমনি নাম উঠে এসেছে রহমান , রাজা-তীর্থ , অমিত পাল ওরফে বুবাই , মিল্টন, শশাঙ্ক , নেহা , এস.এন ঠাকুর , বিকাশ, রীমা সালমা, বুদ্ধেশ্বর শর্মা সহ একাধিক ব্যক্তির নাম।
তেলেঙ্গানা পুলিশের প্রথম দিনের তল্লাশিতেই হই হট্টগোল শুরু হতেই সন্টু , দেবাশীষ সহ শহরের সিংভাগ কল সেন্টারের মালিকরা রাতারাতি গা ঢাকা দিয়েছেন বা শহর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। সুত্রের খবর এদের সাবধানবানী মিলেছে স্থানীয় প্রশাসন থেকে। কল সেন্টারের মালিকরা গা ঢাকা দিলেও তাদের প্রধান প্রতিনিধিরা শহরেই উপস্থিত থেকে তেলেঙ্গানা পুলিশের গতিবিধি নজরে রেখেছেন। সুত্রের খবর পানিট্যাঙ্কি মোড়, সেভক রোড, আশ্রম পাড়া সংলগ্ন এলাকায় যে সব কল সেন্টার রয়েছে তাদের পুরো মাত্রায় অক্সিজেন জুগিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। যে মালিকেরা যেখানে রয়েছেন তাদের সেখানেই থাকতে বলে বেশ কয়েকদিন চুপ থাকবার পরামর্শ এবং আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই বিষয়টি শীতল হয়ে যাবে। তারপর আবার রমারমা কারবার চলবে অবৈধ কল সেন্টারে। স্থানীয় প্রশাসনের আর্শীবাদ নিয়ে বুক ভরা সাহস নিয়ে যে যার নিজেদের জায়গায় উপস্থিত হবে এবং “কিছুই হলনা , আইনত কিছুই করতে পারবে না” এই আত্মবিশ্বাসে চলবে প্রতারণার অফিস।
- Advertisement -
সত্যিই তাই। একদিকে ভিন রাজ্যের পুলিশ এসে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করছে কল সেন্টারের মালিকদের অন্যদিকে শহরের স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কিছুই না জানার ভূমিকায়। অভিযোগ দায়ের হওয়ার অপেক্ষায়। অপরদিকে অভিযোগ দায়েরের উপক্রম হলেও সেখানেও মিলিয়ে দেওয়ার ভূমিকায় সেই পুলিশ। একদিনের অভিযানে কল সেন্টারের মালিকেরা যেমন গা ঢাকা দিয়ে তেমনি বেশ কয়েকদিনের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে বিভিন্ন অফিস। ঠিক এই রকম পরিস্থিতিতে কল সেন্টারব হানা প্রধান নগর থানা পুলিশের। যা একেবারেই লোক দেখানো। বিষয়টা তেমন মনে হওয়াই খুব স্বাভাবিক কারণ , ভিন রাজ্যের পুলিশের কাজে শহরের মানুষ খুশি , তাদের প্রশংসায় পঞ্চমুখ , বারংবার প্রশ্ন উঠে আসছিল বাইরের রাজ্যের পুলিশ যদি এই কাজ করতে সক্ষম হয় তাহলে আমাদের শহরের পুলিশ কেন পারবে না। সেই বানেই কি শেষমেশ বন্ধ কল সেন্টারেই হানা দিল শিলিগুড়ি পুলিশ ? তবে দেখার বিষয় রয়েছে এখানে বেশ কয়েকটি। যে কিংপিনদের নাম তেলেঙ্গানা পুলিশ বলে গেল তাদের বিরুদ্ধে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট কি ব্যাবস্থা গ্রহণ করে , পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবার পর কি শহরের বিভিন্ন কল সেন্টারে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের হানা বহাল থাকবে নাকি এটা শুধুমাত্র “দেখানো” ?