দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কিছুদিন আগেই বাংলার হস্তশিল্পী এবং তাদের শিল্পকর্মের কথা তুলে ধরার সময় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রত্যন্ত পিংলার নয়ার পটচিত্র শিল্পীদের কথা বলেছিলেন এবং তাদের অপরূপ শিল্প প্রতিভার প্রশংসাও করেছিলেন। এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে শোভা পেতে চলেছে সেই পট শিল্পীদের আঁকা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বীর বিপ্লবীদের শৌর্য।
সুত্রের খবর, পিংলার পটচিত্র শিল্পী বাহাদুর চিত্রকরের নেতৃত্বে প্রায় ৩২ জন শিল্পী দীর্ঘ প্রায় ৭ দিন ধরে ৩০০ ফুট লম্বা এবং ৬ ফুট চওড়া একটি পটচিত্র বানিয়েছেন এবং তাতে অপরূপ ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলন, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম বৃত্তান্ত, বাংলার বীর বিপ্লবী ক্ষুদিরাম বসুর কাহিনি থেকে শুরু করে তিতুমিরের বাঁশের কেল্লা। আর সেই পটচিত্রই এবারে শোভা পাবে দিল্লির রাজপথে। রাজধানী দিল্লির রাজপথে নিজেদের শিল্পকলা দেখানোর এই সুযোগ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুব খুশি নয়া’র পটুয়ারা।
এই বিষয়ে শিল্পী বাহাদুর চিত্রকর জানান, “গত বছর নেতাজির জন্ম দিন উপলক্ষে কলকাতার জাতীয় গ্রন্থাগারে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে আমরা ৮ জন শিল্পী মিলে নেতাজির জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে একটি ১২০ ফুটের পট এঁকেছিলাম। আর সেই পট দেখেই অঅত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী”। বাহাদুর এও জানান, সেদিন অনুষ্ঠান শেষে প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে এসে কথাও বলেছিলেন। বলাবাহুল্য আমাদের কাজে খুশি হয়েই তিনি এই সুযোগ আমাদের করে দিয়েছেন। তিনি এও বলেন, কয়েক মাস আগে আমরা ৩২ জন শিল্পী ওড়িশার ভূবনেশ্বরে গিয়েছিলাম। সেখানে ৭ দিন ধরে কাজ করে ৫০ ফুট লম্বা ও ৬ ফুট চওড়া, মোট ৩০০ ফুটের পট তৈরি করি। আর সেই পটই এবারে শোভা পেতে চলেছে সাধারণতন্ত্র দিবসে।
- Advertisement -
উল্লেখ্য, এর আগে বাংলার পটশিল্পরা মূলত পৌরাণিক কাহিনীকেই পটচিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতেন। আর সেই পটচিত্রকেই গানের মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরতেন। কিন্তু দিন পাল্টেছে, বাংলার পটশিল্পরা এখন শুধু পৌরাণিক কাহিনীকেই নয় সামাজিক,রাজনৈতিক পাশাপাশি নানারকমের সচেতনতা বার্তা নিয়ে পটচিত্র তৈরি করেন। এভাবেই নিজেদের কলাকুশলীর মাধ্যমে পট শিল্পীরা আস্তে আস্তে স্থান করে নিয়েছেন বিশ্বের দরবারে। আজকের দিনে দেশ-বিদেশের বহু মানুষ পটচিত্রের জন্যেই ছুটে আসেন পট শিল্পীদের কাছে।
প্রসঙ্গত,গর্বের বিষয় হল শিল্পী বাহাদুর ,চাঁদনী, মহিউদ্দিন, মনোরঞ্জন, কুরবান, সাবিনা, মলয়, বাপি, মফিজুল চিত্রকরদের মতো প্রতিভাবান চিত্রকরদের আঁকা পটে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং বিপ্লবীদের শৌর্য স্থান পেয়েছে। এছাড়াও পটে শোভা পেয়েছে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম বৃত্তান্ত, ক্ষুদিরাম বসুর ফাঁসির কাহিনী, মাতঙ্গিনী হাজরা স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা, তিতুমিরের বাঁশেরকেল্লার মতো আরও অনেক রোমাঞ্চকর ঘটনা এবং অভিজ্ঞতা।