দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- সম্প্রতি সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং গোলে জানান, করোনা মোকাবিলার জন্য তিনি ৩০০ শয্যার একটি হাসপাতাল নির্মান করবেন দক্ষিণ সিকিম তথা নামচির কাছাকাছি একটি মাঠে। আর এই নিয়েই সিকিম সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেন ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম ব্যক্তিত্ব তথা খেলোয়াড় বাইচুং ভুটিয়া। হাসপাতাল বানানোর ব্যাপার শুনে তিনি বলেন, যেই মাঠে হাসপাতাল বানানোর কথা চলছে সেটি ওই এলাকার একমাত্র খেলার মাঠ। পড়াশোনার পর ওই মাঠে বাচ্চারা খেলতে আসে, যদি ওই মাঠকে হাসপাতালে পরিণত করা হয় তাহলে বাচ্চারা খেলাধূলা থেকে বঞ্চিত হবেন। নিজে একজন খেলোয়াড় হয়ে তিনি জানেন বাচ্চাদের কাছে খেলার মাঠ কতটা জরুরি। ফলে তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানান সরকারের এই সিদ্ধান্তে। এই ব্যাপারে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “সিকিমের মধ্যে আরও অনেক জায়গা আছে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্য,কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কেন বেছে বেছে খেলার মাঠেই হাসপাতাল বানাতে চাইছেন তা আমার কাছে একেবারেই অজানা”। বাইচুং-এর এই বক্তব্য শুনে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মুখ্যমন্ত্রীর পার্টি সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার সদস্যেরা। বাইচুং-এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে কড়া লকডাউনের মধ্যেই রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন তারা, জায়গায় জায়গায় বাইচুং-এর পোস্টার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, পাশাপাশি শ্লোগান দেওয়া হয়, ” বাইচুং সিকিমের শত্রু”। তবে এই ব্যাপারটি একেবারেই গায়ে মাখেননি বিশিষ্ট ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়া। তার বক্তব্য, “কে বা কারা তার ব্যাপারে কী বললো তাতে তার কোনো যায় আসে না, তিনি সিকিমের ছেলে, গোটা সিকিমের মানুষ তার পাশে আছে ফলে তার বিরুদ্ধে কারা প্রতিবাদ জানালেন তাতে তার কোনো মাথাব্যাথা নেই”। তিনি এও বলেন, সিকিমে মাত্র দুটি খেলার মাঠ রয়েছে, একটি বাইচুং ভুটিয়া স্টেডিয়াম যা নামচিতে রয়েছে, আর অন্য একটি হলো ওই বড় মাঠ, যেখানে বাচ্চাদের ট্রেনিং করানো হয়। কিন্তু সরকার এই মাঠটিকে হাসপাতাল বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
উল্লেখ্য এই মুহুর্তে বাইচুং মুম্বাইতে ইউরো কাপ ফুটবলের ধারাভাষ্য দিতে গিয়েছেন। মুম্বাইতে থাকাকালীন তিনি জানান, ” একটি হাসপাতাল তৈরি করতে মোট খরচ পড়বে ৫০০ কোটি টাকা, তবে সরকারের নির্ধারিত বাজেট অনুযায়ী দেওয়া হয়েছে মাত্র ৮০ কোটি টাকা। পাশাপাশি সিকিমে হাসপাতালে কাজ করার মতো প্রশিক্ষিত ছেলে মেয়েদের অভাব, তাই যদি হাসপাতাল বানানো হয় এবং বাইরে থেকে ছেলেমেয়েদের এনে সেখানে কাজে লাগানো হয় তাহলে সিকিমের জনসাধারণদের বঞ্চিত করা হবে “। সবমিলিয়ে বাইচুং-এর বক্তব্য, সিকিম সরকার সিকিমের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে হাসপাতাল বানাচ্ছেন না৷ যদি তাই হতো তাহলে সবার প্রথমে সরকার সিকিমের সাধারণ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার দিকে নজর দিতেন, কিন্তু তিনি তা করেননি। ফলে বাইচুং বলেন, হঠাৎ হাসপাতাল বানানোর দিকে কেন মুখ্যমন্ত্রী নজর দিয়েছেন তা একেবারেই অজানা।