বিবেক সিংহ , মালদাঃ- আজকের সভায় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ফুটে ওঠে তার হতাশার কথা। তিনি জানান, “মালদায় অনেক কাজ করার পরেও আমাদের ঝুলি শূন্য। একটাও আসন পাইনি মালদায়।” এই কথার পাশাপাশি তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এও বলেন, “তবে এবার আর খালি হাতে ফিরব না। এই ভোটটা আমার ভোট, অন্য কারও নয়।” এই কথার পাশাপাশি একইসঙ্গে এদিন ইংরেজবাজারে দাঁড়িয়েই তৃণমূল নেত্রীর দৃপ্ত ঘোষণা ছিল, “মমতাকে হারানোর ক্ষমতা তোমাদের নেই। জীবন থাকতে বিজেপিকে আসতে দেব না। বাংলায় জিতে ভারতবর্ষকেও দেখব।”
উল্লেখ্য, আজকের এই কর্মীসভায় মুখ্যমন্ত্রীর আক্ষেপ প্রকাশের মূল কারণ হলো ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন। সেই সময় তৃণমূলকে উত্তরবঙ্গ থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছিল। ৮ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ৭টি আসন বিজেপি পেয়ে জয়লাভ করেছিল। আর মালদার ২ কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেস প্রার্থী। সেই ঘটনার কথা মনে করে আজকের সভায় তিনি তার বক্তব্য রেখেছেন। তিনি মালদাবাসীর উদ্দেশ্য বলেন, “আমি মালদার জন্য অনেক করেছি। কিন্তু ভোট এলেই মালদার রাজনৈতিক অঙ্কটা বদলে যায়, কিন্তু এবার আর খালি হাতে ফিরব না।” বলাবাহুল্য আজকের সভায় মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূলকে জয়যুক্ত করার জন্য মালদাবাসীকে একপ্রকারভাবে আহ্বান জানিয়েছেন।
এই সকল বক্তব্যের পরেই আজকের সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিভিন্ন সরকারি কাজের কথা সকলের সামনে তুলে ধরেন, তিনি জানান, “একলাখি বালুরঘাট ট্রেন করা হয়েছে। লকডাউনে ভিন রাজ্যে যারা আটকে পড়েছিল তাদের ঘরে ফেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের স্কলারশিপ দেওয়া হচ্ছে। খাদ্যসাথী প্রকল্পে মানুষকে বিনা পয়সায় রেশন দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে সাধারণ মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের ট্যাব দেওয়া হয়েছে। এমনকি যারা ট্যাব পায়নি, তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও রয়েছে কন্যাশ্রী প্রকল্প, পাশাপাশি সবুজ সাথী প্রকল্পে সাইকেল দেওয়া হয়েছে, আরও ২০ লাখ সাইকেল দেওয়া হবে। এছাড়াও যে রাজ্য সরকারের ‘কৃষকবন্ধু’ প্রকল্পে ৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা করা হয়েছে সেই ব্যাপারেও আলোচনা করা হয়েছে।
এসব কিছু ছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিজেপির নেতাদের ব্যাপারেপ কথা বলেন। তিনি জানান, দিল্লির বিজেপি সরকার আমফানের সময় কোনোরকম সাহায্য করেনি, কেন্দ্র কোনও টাকা না দেওয়া সত্ত্বেও টাকা দেওয়ার মিথ্যে দাবি করছে। এখন বাংলায় নির্বাচন বলে তাই বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বার বার বাংলায় আসছে বলেও কটাক্ষ করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, “ওরা এখন বার বার বাংলায় আসছে। ভাবছে বাংলা দখল করবে। ওদের ধান্দা হচ্ছে, দিল্লি থেকে বাংলাকে নিয়ন্ত্রণ করবে। গুজরাত থেকে বাংলা নিয়ন্ত্রণ করবে। কিন্তু আমার জীবন থাকতে বিজেপিকে আসতে দেব না। বাংলায় আমরা জিতবই।”