দ্য এক্সপোস ব্যুরো :- চিনের সাথে সংঘাতে আরও উন্নত ধরণের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। আর এই কারণেই ভারত সরকার ইতিমধ্যেই ফ্রান্স থেকে আনিয়ে নিয়েছে পাঁচটি রাফাল ফাইটার জেট। এই জেট ছাড়াও ভারত সরকার রাশিয়া থেকে ১২ টি অত্যাধুনিক সুখোই ফাইটার জেট ও ২১টি নয়া ভার্সন এর মিগ-২৯ নিয়ে আসারও পরিকল্পনাও চালাচ্ছে। এগুলি ছাড়াও আগামী বছরের মধ্যেই রাশিয়া থেকে ভারতে আসছে এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম। এছাড়াও আক্রমণাত্মক হালকা ওজনের স্পুট এসডিএম১ ট্যাংক কেনার পরিকল্পনাও করছে ভারত।
আপাতত পূর্ব লাদখের উঁচু পাহাড়ি এলাকায় ভারী টি-৯০ ভীষ্ম ও টি-৭২ ট্যাংক মোতায়েন করা হয়েছে। এত কিছু ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও এই মুহূর্তে ভারতের কাছে হাল্কা ওজনের যুদ্ধট্যাংক নেই। আর সেই জন্যই ভারত রাশিয়া থেকে স্পুট লাইটওয়েট ট্যাংক নিয়ে আসার ব্যবস্থা করছে। এই ট্যাংক চলে এলে ভারতীয় সেনা আরও বেশি ক্ষমতার অধিকারী হবে ।
সূত্রের খবর চিনের বাহিনী গালওয়ান নদীর স্রোত বেড়ে ওঠায় পূর্ব লাদাখ থেকে সেনা সরিয়ে নিয়ে আকসাই চিন ও তিব্বতে সামরিক পরিকাঠামো তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে। এমনকি স্যাটেলাইটেও একই দৃশ্য ধরা পড়েছে। ছবিতে দেখা গেছে লাদাখ লাগোয়া বিতর্কিত ভূখণ্ডে এরই মধ্যে প্রচুর সেনা বাহিনী মোতায়েন করেছে চিন। এমনকি তাদের কাছে টাইপ-১৫ ট্যাংক পর্যন্ত রয়েছে। কিন্তু আমাদের ভারতের সেনারাও পিছিয়ে নেই। তারাও আকসাই চিন লাগোয়া দৌলত বেগ ও ওল্ডইতে টি-৯০ মোতায়েন করেছে, যার ওজন প্রায় ৪৬ টন।যদি কোনোভাবে চিনা বাহিনী কারাকরাম লাগোয়া ভারতের নেতৃত্বাধীন এলাকায় ঢোকার চেষ্টা করে তাহলে চিনা সৈনিকদের জবাব দেবে ভারতীয় সেনা।
- Advertisement -
এই ট্যাংগুলি ছাড়াও ভারতীয় সেনা বাহিনীর কাছে রয়েছে টি-৭২ যার ওজনও প্রায় ৪৫ টন। যেহেতু এই ট্যাংক গুলির ওজন খুব বেশি তাই পাহাড়ি এলাকায় এগুলি নিয়ে যাওয়া খুবই কষ্টকর ও সময় সাপেক্ষ আর সেই কারণেই কয়েক বছর ধরেই ভারত পরিকল্পনা করছিল হালকা ওজনের ট্যাংক নেওয়ার। আর এবারে সেই ট্যাংক নেওয়ার প্রস্তাব ভারতকে দিয়েছে রাশিয়া। এই ট্যাংকটি মূলত ভীষণ হালকা আর রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে এই ট্যাংক ব্যবহার করা হয়। এই হালকা যুদ্ধট্যাংকটি বানিয়েছে টাক্টর প্লান্টস কনসার্ন। ২০১৬ নাগাদ এই ট্যাংকটি রাশিয়ার সেনাবাহিনীর সাথে যুক্ত হয়। এই স্প্রুট ট্যাংকের দৈর্ঘ্য ৭.০৮ মিটার এবং পরিধি প্রায় ৩.১৫ মিটার। এর উচ্চতা ৩ মিটারের থেকে একটু বেশি আর এর ওজন ১৮ টন যা অন্যান্য যুদ্ধ ট্যাংকের প্রায় অর্ধেক।
কিন্তু হালকা হওয়া সত্ত্বেও এর ক্ষমতা অন্যান্য ট্যাংকের থেকে তুলনামূলক বেশি। এই ট্যাংকটি জল ও সমতলে সমান ভাবে চলার উপযোগী। এই ট্যাংকে চালক,কমান্ডার ও গান ফাইটার নিয়ে মোট তিন জন দরকার যাদের নির্দেশে এই ট্যাংক কার্যকর হবে। এমনকি এই ট্যাংকে ১২৫ এমএম বন্দুক লাগানো রয়েছে এছাড়াও আছে ৭.৬২ এমএম মেশিন গান। এই ট্যাংক থেকে কম ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ও নিক্ষেপ করার ব্যবস্থা রয়েছে।এই ট্যাংকের ক্ষমতায় শত্রু পক্ষের সামরিক পরিকাঠামো মুহূর্তে নিঃশেষ হয়ে যেতে পারে।এছাড়াও ডিজিটাল ফায়ার করতেও এই ট্যাংক সক্ষম। এমনকি রাতে লক্ষ স্থির রাখার জন্য নাইট ভিশন সিস্টেম ও রয়েছে। এই ট্যাংক ৫০০ হর্সপাওয়ারের ইউনিটি ২৯ ডিজেল ইঞ্জিন দিয়ে চলে।এর গতি ঘন্টায় প্রায় ৭০ কিলোমিটারের বেশি। প্রায় ৫০০ কিলোমিটার অব্দি অনায়াসে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে এই ট্যাংকটিকে। আর সেই কারণেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে এই ট্যাংক থাকলে খুব সহজেই দুর্গম পথ অতিক্রম করতে পারবে।