এক্সপোস ব্যুরো :- বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার বিনোদপুর গ্রামের বাসিন্দা রুনি খাতুন তীব্র পেটে যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হন রামপুর হাট হাসপাতালে । বছর একুশের রুনি মানিসিক ভারসাম্যহীন । গত এক সপ্তাহ আগে রামপুর হাট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে এক্স-রে তে ধরা পড়ে ধাতব জিনিস রয়েছে পেটে , নিশ্চিত হতে সিটি স্ক্যান করা হয় , তখনই ধরা পড়ে অনেক পরিমাণ ধাতব পদার্থ রয়েছে পেটে । কিন্তু রোগীর হিমোগ্লোবিন ও অ্যালবুমিন কম থাকায় অপারেশন করা সহজ ছিল না । এক সপ্তাহ ধরে প্রায় পাঁচ ইউনিট রক্ত দিয়ে ঠিক করা হয় বিভিন্ন প্যারামিটার , কৃত্রিম পদ্ধতিতে বাড়ানো হয় পুষ্টি । বুধবার সকালে চারজন মিলে অপারেশন শুরু করা হয় ।
- Advertisement -
পেট কাটতেই চক্ষু চড়কগাছ ডাক্তারদের , পেট থেকে এসব বেড়িয়ে আসবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি তারা । পাকস্থলীতে গিজগিজ করছে গলার হার , চেন , কানের দুল , লকেট , কয়েক , ঘড়ি , বালা , নূপুর ঝুমকো , সিলভার কয়েক সহ অনেক ছোট বড় সোনার জিনিস । সার্জেন সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের কথায় , “পেট তো নয় যেন রত্ন ভাণ্ডার” , কি নেই সেখানে ! দেড় ঘণ্টা ধরে অস্ত্রোপচারের পর সেগুলো বের করে আনতে সক্ষম হন ডাক্তাররা , তারপর সেগুলো টেবিলে সাজিয়ে রেখে লিস্ট তৈরি করা হয় । পাকস্থলী থেকে প্রায় দু কেজিরও বেশি গয়না বের করে আনা হয় । ডাক্তারদের কোথায় এমন দৃশ্য পেটের ভেতর দেখব তা স্বপ্নেও ভাবিনি ।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, রোগিণীর পেটে ৬০টি কয়েন, সোনা ও রুপোর আংটি, চেন, নূপুর, কানের দুল, লকেট, মার্বেল– এই সমস্ত কিছু পাওয়া গেছে। মোট ৩৩৪টা জিনিস বার করা হয় , এ ছাড়াও অসংখ্য ছোট্ট আংটা, পিন ইত্যাদি ক্ষুদ্র জিনিস পাকস্থলীর দেওয়াল জুড়ে আটকে ছিল। সমস্তটা বার করতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় সার্জেনদের। কোনও কোনও জিনিস বার করতে সাহায্য নেওয়া হয় ম্যাগনেটেরও। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পরে এখন সুস্থ আছেন তরুণী।
রুনি খাতুনের পরিবারের বক্তব্য বাড়ি থেকে প্রায়ই গয়না উধাও হয়ে যেত , কিন্তু সেগুলো যে রুনি খেয়ে ফেলত তা তারা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি । বাড়ির পাশে মনিহারির দোকান রয়েছে , সেখান থেকেও দোকানির অগোচরে নান রকম জিনিসপত্র সে নিয়ে আসত । তবে রুনি খাতুন কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান এগুলো আমি খাইনি , এগুলো আল্লার দান ।