দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- শুরু হিয়ে গিয়েছে শীতের মরসুম,আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে মানুষের ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা। আবার অন্যদিকে সকলেরই মাথায় রয়েছে করোনা মহামারীর কথা। অনেকে মহামারীর কথা ভেবে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও ভয়ে যেতে পারছেন না। কিন্তু আমাদের একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে, “মন ভালো থাকলেই শরীর ভালো থাকে “। কিন্তু বাড়িতে বসে কারোরই মন ভালো থাকতে পারে না, অপরদিকে কয়েকমাসের টানা লকডাউনে বাড়িতে বন্দী থেকে মন এমনিতেই বিষিয়ে উঠেছে। এক্ষেত্রে সবার প্রথমে মাথায় যা আসে তা হলো, লোকজনের ভিড় থেকে অনেক দূর শান্ত-নিরিবিলি জায়গার কথা যেখানে গেলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য অনুভব করা যাবে অথচ মহামারীতে আক্রান্ত হওয়ার কোনো ভয়ও থাকবে না। এই সকল কথা ভাবার পরের মুহুর্তেই মাথায় আসে বাস্তবে এইরকম জনবিরল জায়গা থাকা অসম্ভব। কিন্তু না, এইরকম একটি জায়গা বাস্তবে আছে আর আমাদের খুব কাছেই আছে, জায়গাটির নাম হলো কণাতাল।
বেশিরভাগ ভ্রমণ পিপাসু মানুষেরা আছেন যারা শীতকালীন ছুটিতে পাহাড়ে যেতে পছন্দ করেন। আবার অনেকে মন ভালো করার জন্য পাহাড়ের শান্ত-শীতল আবহাওয়াকেই বেছে নেন। করোনা আবহে এই সকল ভ্রমণ প্রেমী মানুষদের জন্য একটি আদর্শ জায়গা হলো কণাতাল। শহরের রোজকার জীবনের থেকে একেবারে আলাদা হলো এই কণাতাল গ্রাম। এই গ্রামে পাহাড়ের মাঝে মাঝে চোখে পড়বে কোটি বনাল স্টাইলের কটেজ, যা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেবে আদিম ভারতীয় জীবনযাত্রার কথা। এইসকল কটেজগুলি থেকে যে কোনো একটিকে থাকার জন্য বেছে নেওয়া যাতে পারে৷ সকালে ঘুম থেকে উঠে দিনের শুরুই হবে বুনো মিন্ট, ক্যামোমিল,সিনেমানের ফ্লেবারে তৈরি চা দিয়ে। সকালের চা সেরে চাইলে আশেপাশের গ্রামে বা কটেজের পাশের আপেল বাগানে সময় কাটানো যেতে পারে।
- Advertisement -
কণাতল গ্রামের থেকে মাত্র এক ঘন্টার দূরত্বে রয়েছে ধনৌলটি। এই স্থান থেকে কিছুটা ওপরে উঠলেই চোখে পড়বে “অম্বার” ও “ধারা” নামের দুটি ইকোপার্ক। এই ইকোপার্কের সময় কাটানো যাতে পারে এমনকি সামান্য দুরত্বে রয়েছে চারিদিকে দেবদারু গাছে ঢাকা আরও একটি এডভেঞ্চার পার্ক,সেখানেও নিরিবিলিতে সময় কাটানো মন্দ হবে না। ধনৌলটির থেকে গাড়িতে করে মাত্র ২০ কিলোমিটারের দুরত্বে রয়েছে সুরখন্দা দেবীর মন্দির। এই মন্দিরের যাত্রাপথটি দেখার মতো; প্রায় দুই কিলোমিটার পথ এঁকেবেঁকে সিঁড়ির মতো উঠেছে। মন্দিরের একেবারে ওপর থেকে প্যানারেমিক ভিউতে চোখে পড়বে বরফে ঢাকা ঋষিকেশ, হিমালয়ের পাহাড়, দেরাদুন ইত্যাদি। এগুলি ছাড়াও কণাতাল থেকে মাত্র এক কিলোমিটারের দূরত্বে রয়েছে কোদিয়া ফরেস্ট। পাইন ও দেবদারু গাছ দিয়ে ঢাকা এই জঙ্গল, অরণ্যপ্রেমীদের কাছে টানবে। খুব ভোরের দিকে এই অরণ্যে গেলে হরিণ সহ আরও অন্যান্য পশু ও নানাপ্রকার পাখিদের দর্শন ও হতে পারে। মুসৌরি থেকে মাত্র ১৮ কিলোমিটার দূরের এই কণাতাল গ্রাম করোনা আবহেও নিরিবিলিতে শীতের ছুটি কাটানোর জন্য নিঃসন্দেহে একটি আদর্শ জায়গা।