ডেস্ক রিপোর্ট , এক্সপোস :- পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদের বহালনগর গ্রাম থেকে পনেরোজন শ্রমিকের একটি দল আপেল বাগানে কাজ করতে প্রতিবছরই কাশ্মীরে পা জমান। দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের কটরাসু গ্রামে একটি কাঠের বাড়ি ভাড়া করে থাকতেন তারা। মঙ্গলবার সন্ধেয় তাঁদের কয়েকজনকে ঘর থেকে বের করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। জঙ্গির গুলিতে খুন হয় ৫ বাঙালি শ্রমিক, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন রফিক শেখ (২৮), নাইমুদ্দিন শেখ (২৮), কামরুদ্দিন শেখ (৩০), মুরসালিন শেখ (২৮), রফিকুল আহমেদ (৩০)। একজন গুরুতর আহত অবস্থায় শ্রীনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গোটা এলাকায় জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ এবং সেনার ১৮ নম্বর ব্যাটেলিয়ন চিরুনি তল্লাশি শুরু করেছে।
একদিকে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বাছাই করা সদস্যদের কাশ্মীর সফরের দিনই পাঁচ বাঙালি শ্রমিককে খুন করল জঙ্গিরা, অপরদিকে নরেন্দ্র মোদীর সরকার কাশ্মীরের শান্তিপূর্ণ ছবি তুলে ধরতে আন্তর্জাতিক-জাতীয় স্তরে বড় ধাক্কা খেল বলে মনে করা হচ্ছে। এদিনের হত্যাকান্ড ২০০৬ সালের বাঙালি পর্যটকদের বাসে গ্রেনেড হামলার কথা আবার মনে করিয়ে দিল। গত কয়েকদিন ধরেই কাশ্মীরে ভিন রাজ্যের বাসিন্দাদের নিশানা করছে জঙ্গিরা। সিংহভাগ ঘটনাই ঘটছে দক্ষিণ কাশ্মীরে। কখনো জঙ্গিদের নিশানায় ভিন রাজ্যের ট্রাক চালক, কখনো ব্যাবসায়ী আবার কখনো শ্রমিক।
সেনা কর্তাদের মতে গত এক বছরে উপত্যকায় কয়েকগুন নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, ফলে সেখানে হামলার ছক ভেস্তে যাচ্ছে বারংবার, ফলে সাধারন মানুষকে সহজেই লক্ষবস্তূ করা সম্ভব, পাশাপাশি ভিন রাজ্য থেকে আগত ফল ব্যাবসায়ীদের নিহত করে দেশের কাছে নিজেদের অস্তিত্ব জাহির করে উপত্যকার অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলে আরো অস্থিরতা তৈরী করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ বিষয় নিয়ে অধীর চৌধুরী জানান, “নরেন্দ্র মোদীর ভরসায়।ভরসা করে রুটিরুজির জন্য কাশ্মীরে গিয়ে বাংলার শ্রমিকেরা আজ প্রাণ দিলেন। ” অপরদিকে গতকাল রাত থেকেই মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বহালনগর গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে, বাকিদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই, আবার না কোন মায়ের কোল খালি হয়ে যায় বা আবার না কোন খারাপ খবর আসে।