দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- চতুর্থ দফার নির্বাচনের দিন শীতলকুচিতে সিআরপিএফ এর গুলিতে মৃত্যু হয় চারজন নিরপরাধ যুবকের। আর এই ঘটনার পর পরই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা রাজনৈতিক মহলে। ঘটনার পর নির্বাচন কমিশন শীতলকুচিতে মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের প্রবেশ করার অনুমতিও দেননি, তবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করার পেছনে কারণ ছিল যাতে ওই এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে না ওঠে। শীতলকুচিতে যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর মুখ্যমন্ত্রী তার সভায় শীতলকুচির দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে কিছু মন্তব্য করেন যার ফলে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে আগামী ২৪ ঘন্টা প্রচার না করার নোটিস পাঠানো হয়। আর এই নিষেধাজ্ঞা জারির প্রতিবাদেই আজ রাস্তায় নেমেছেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেস। আজ কলকাতার পাশাপাশি শিলিগুড়িতেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।
আজ শিলিগুড়ির গান্ধী মূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির প্রার্থী গৌতম দেব,দার্জিলিং জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রঞ্জন সরকার,শিলিগুড়ি কেন্দ্রের প্রার্থী ওম প্রকাশ মিশ্র,রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস এছাড়াও তৃণমূল আইনজীবি সেলের পক্ষ থেকে ছিলেন অমৃতা মুখ্যার্জী বিশ্বাস সহ জেলার অন্যান্য তৃণমূল নেতৃত্ব ও কর্মীরা। আজ মঙ্গলবার শিলিগুড়ির বাঘাযতিন ময়দানের সামনে থেকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা একটি ধিক্কার মিছিল বার করেন যা গান্ধী মূর্তির সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর গান্ধী মূর্তির সামনে এরা প্রত্যেকে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে ঘিরে নানারকম বক্তব্য রাখেন। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন মন্ত্রী অরুপ বিশ্বাস। তিনি বলেন, আজ নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বদল করার মতো কেউ নেই, কিন্তু ভারতীয় সংবিধানে হয়ত এমন একটি দিন আসবে যেদিন নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে ভেবে দেখার জন্য একটি অন্য দল গঠন করা হবে, পাশাপাশি তিনি নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে এও বলেন, “নির্বাচন কমিশন বাংলার নির্বাচন পরিচালনা করছেন ফলে তাদেরকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করা উচিত”। এছাড়াও তিনি বলেন, যেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নোটিস পাঠানো হয়েছে সেখানে নরেন্দ্র মোদি কিংবা অমিত শাহকে নোটিস পাঠানোর কথা, কিন্তু তা না করে নির্বাচন কমিশন দিলীপ ঘোষকে নোটিস পাঠিয়েছে যা কোনোভাবেই নিরপেক্ষ কাজ নয়। পাশাপাশি অরুপ বিশ্বাস বলেন, “শত চেষ্টার পরেও তৃণমূল কংগ্রেসকে হারানো সম্ভব নয়, দীর্ঘদিনের পরিশ্রমে তৃণমূল কংগ্রেস যেভাবে মানুষের ভালোবাসা পেয়েছে তাতে একথা স্পষ্ট যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আটকে রাখা কারোর পক্ষে সম্ভব নয়”। এদিন বিজেপির ব্যাপারে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলায় প্রচারে এসে শুধুমাত্র ‘দিদি দিদি’ করে ব্যঙ্গ করেন, যদি সত্যিই তিনি কিছু করে থাকতেন তাহলে এভাবে ব্যঙ্গ করতেন না। এমনকি তিনি এও বলেন, বিজেপি কখনও অতীত বা বর্তমান নিয়ে কিছু বলে না শুধু বলে আমরা ক্ষমতায় আসলে বাংলাকে সোনার বাংলা বানিয়ে দেব। অথচ আমরা সকলেই জানি ; বিজেপি এই একই কথা আসামে গিয়ে বলেছিল কিন্তু আসাম শ্মশানে পরিণত হয়েছে, ত্রিপুরাতেও এই কথাই বলেছিল কিন্তু ত্রিপুরার অবস্থাও ভালো নয়। এবারে বিজেপি বাংলাকে শ্মশানে পরিণত করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে বিজেপির পক্ষে কোনোভাবেই তা সম্ভব নয়।
সবশেষে অরুপ বাবু বলেন, নির্বাচন কমিশন শুধুমাত্র বিজেপির হয়ে কাজ করছে। নির্বাচন কমিশন একেবারেই নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করছে না। আর একথা কেবল কোনো রাজনৈতিক দলের নয় বাংলার প্রত্যেকটি সাধারণ মানুষের।