দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- নেই বিদ্যুৎ, পানীয় জলের অভাব, সবমিলিয়ে বন্যায় বিপর্যস্ত অসম! জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে একাধিক গ্রাম, জলমগ্ন জমিজমা, নিজেদের সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসেছে একাধিক মানুষ, প্রাণ হারিয়েছে অনেকে। অসমের ভয়াবহতা যেন দিনের পর দিন আরও বেড়েই চলেছে। এমনকি জল ঢুকেছে হাসপাতালের ভেতরেও। এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে রাস্তার ওপরেই।
জানা গিয়েছে, বন্যার জলে এই মুহুর্তে জলের তলায় শিলচরের কাছার ক্যানসার হাসপাতাল। জল ঢুকে টইটুম্বুর প্রতিটি ওয়ার্ড। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিস্থিতিতে ক্যানসার রোগীদের ট্রিটমেন্ট হাসপাতালের ভেতরে করা সম্ভব না হওয়ায়, ট্রিটমেন্ট চলছে রাস্তার ওপরেই। রাস্তার এক কোণে কোলা আকাশের নীচে ক্যান্সার রোগীদের কেমোথেরাপি দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছে চিকিৎসকেরা। বন্যার মধ্যেও হাসপাতালের পরিষেবা কোনোভাবে চালু রেখে রোগীদের প্রাণ বাঁচাতে তৎপর তারা। রোগীদের লাইফ জ্যাকেট পরিয়ে একদিকে যেমন চলছে চিকিৎসা, অন্যদিকে রোগীদের পরীক্ষা নিরীক্ষাও করা হচ্ছে রাস্তার ওপরেই।
প্রসঙ্গত, বন্যার জেরে ভয়াল পরিস্থিতি অসমের। অসমের ৩২টি জেলার প্রায় ৫৫ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই বন্যার কারণে। ব্রহ্মপুত্র ও বরাক নদীর জলস্তর বাড়ছে প্রতিনিয়ত, ফলে নতুন করে অববাহিকার বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। যেহেতু বরাক নদীর তীরেই শিলচর শহর, তাই বরাক নদীর জল সবদিক থেকে ঢুকতে শুরু করেছে দক্ষিণের বড় শহর শিলচরে, ফলে ভেসে গিয়েছে শিলচর শহরের একাধিক এলাকা। এমনকি কোথাও কোথাও জল একতলা বাড়ির ছাদ ছাড়িয়ে গিয়েছে। বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে একাধিক মানুষ। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রবল বৃষ্টিতে বরাক নদীর বাঁধ ভেঙে পড়াতেই চরম সমস্যার মুখে পড়েছেন তারা, বাঁধ ভেঙে পড়ায় নদীর জল প্রচন্ড গতিতে ঢুকে পড়ছে শহরের ভেতরে, আর তাতেই জল জমেছে রাস্তায়।
উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই উদ্ধারকাজে নেমেছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দল। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে এখনো পৌঁছাতে পারেননি তারা। এমনকি হেলিকপ্টার থেকে খাবার, জলের পাউচ ফেলা হলেও তা কোনও একটি উঁচু বাড়ির ছাদে ফেলা হচ্ছে, তবে গলাসমান জল ভেঙে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেই জায়গায় পৌঁছতে অনেকেই সাহস পাচ্ছেন না। খাবার ও পানীয় জলের অভাবে দিন কাটাচ্ছে অসমের একাধিক এলাকার মানুষ।