দ্য এক্সপোস ব্যুরোঃ- সোমাবার থেকে দুই মহাশক্তিধরের লড়াই শুরু হচ্ছে, শুধু এই রাজ্য বা দেশ নয়, সারা বিশ্ব, যাকে চিনতো সেই ডানলপ সাহাগঞ্জ ফুটবল ময়দানে। প্রায় ২৫০ একরের উপর, সেই বিশাল কারখানা চত্বর, মুখ লুকিয়েছে জঙ্গলের আড়ালে। শুকুনের দল ইতিমধ্যেই খুবলে খেয়েছে কারখানার সবকিছুই। বাম জমানায় পবন রুইয়ার হাতে কারখানা আসার পর, বন্ধ হয়ে যায় ইতিহাসের সাক্ষী ডানলপ। তাকেই হাতিয়ার করেছিল বর্তমান শাসক। ডানলপ বাঁচাও আন্দোলন। সেও কাটতে চলেছে ১০টি বছর। কারখানা তো খোলার কোনো চেষ্টা হয়নি! উল্টে সেই আন্দোলনও হারিয়ে গেছে সব রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে।
সোমবার ও মঙ্গলবার দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার ঠিক একদিন পরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভার লড়াইয়ে নামছেন। যে মাঠে একদিন সাহেবদের খেলা থেকে শ্রমিকদের খেলায় মেতে উঠতো এলাকার মানুষ, সেই বিশাল ময়দানই এখন রাজনৈতিক হেভিওয়েটদের ভোটের ময়দান। কারন এখানে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হাজির করে প্রদর্শন করা যাবে কার কত শক্তি। শ্রমিক আন্দোলন থেকে শুরু করে কোর্টের দরজা , মাথা ঠুকেও কোনো লাভ হয়নি। ইতিমধ্যেই পরিদর্শন সম্পুর্ন , নিলামের জন্য ওঠা এখানকার পরে থাকা যন্ত্র সামগ্রী সম্ভাব্য খরিদ্দার হবেন কেউ ।
- Advertisement -
শ্রমিকদের কাছে অবশ্য, কি প্রধানমন্ত্রী! কি মুখ্যমন্ত্রী! আর কোনো আশা কোনো উৎসাহ নেই। কারণ তারা সব নেতা! রাজনৈতিক দল! সকলকে চেনা হয়ে গেছে! ডানলপকে হাতিয়ার করে জয়মাল্য পড়েছে বিভিন্ন নেতারা, অন্যদিকে কারখানা জঙ্গলে চাপা পড়েছে, শ্রমিকরা হারিয়ে গেছে অন্ধকারে।
পেটের দায়ে যে যেমন ভাবে পেড়েছে নিজেদেরকে অন্য পেশার সাথে যুক্ত করে নিয়েছে । তবে তাদের একটু আশা রয়েছে , তবে তা মোদিজী বা মুখ্যমন্ত্রীকে কেন্দ্র করে নয়। তাদের আশা কোর্টের নির্দেশে লিকুইডিটরের হাতে থাকা কারখানার নিলামের পরিদর্শন নিয়ে। অবশিষ্ট বেঁচে আছে চোরের হাত থেকে, সেটুকু বিক্রি হলে যদি বকেয়া পাওনা কিছু ফেরত পাওয়া যায়! সেই স্বপ্নই দেখছে তারা।
বর্তমান শাসক দলের জেলা সভাপতি তো ডানলপ খোলার প্রসঙ্গ টানতেই তার বলার এক্তিয়ারের মধ্যেই পড়েনা বলে এড়িয়ে গেছেন। এলাকার সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি, তিনি দোষ চাপিয়েছেন সেই তৃণমূল সরকারের ওপরেই। প্রধানমন্ত্রীর আসার প্রাক্কালে সভাস্থল পরিদর্শনে এসে কৈলাশ বাবু জানিয়েছেন শুধু ডানলপ নয়! বন্ধ হয়ে যাওয়া সমস্ত কারখানাই একটি কমিটি তৈরি করে তারা ‘ক্ষমতায়’ এলে খোলার কাজ শুরু করবেন।
যে ৩৪বছরের বাম জামানায় ঐতিহাসিক কারখানায় অন্ধকার নেমে এসেছিল, সেই বাম নেতা সেলিম বাবু জানিয়েছেন, বন্ধ যখন তাদের সময় হয়েছিল! তারা ক্ষমতায় এলে আবার খুলে দেখিয়ে দেবে। অপেক্ষা আগামীকালের, বিশ্বের দরবারে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর একমাত্র নামকরা ডানলপ কারখানা বন্ধ নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী কি বলেন সেটাই দেখার। তবে শ্রমিকরা জানে, কারখানাও যেমন নেই, খুলবেওনা কোনোদিন! এই মাঠ পলাশীর প্রান্তরের মতন পড়ে থাকবে নেতাদের রাজনৈতিক ময়দান হিসাবে।